পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটি

পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটি

পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটি
জুনাইদ কবির,ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও।৩৯ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটি গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। পরিত্যক্ত জমিতে হচ্ছে চাষবাস। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রানওয়ে ছেয়ে গেছে আগাছায়। স্থানীয়রা এটি ব্যবহার করছেন ফসল শুকানোর কাজে। স্থানীয়দের দাবী, বিমান বন্দরটি চলাচলের উপযোগী করা হোক।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে শিবগঞ্জ-মাদারগঞ্জ এলাকায় ৫৫০ একর জমির ওপর ১৯৪০ সালে এই বিমান বন্দরটি স্থাপন করা হয়। জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশেষ কৌশল প্রয়োগের উদ্দেশ্যে বিমান বন্দরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর রানওয়ে তিন কিলোমিটার। রানওয়ের পশ্চিম প্রান্তে ছিল ১০টি সাব-রানওয়ে। যেখানে যুদ্ধ বিমান লুকিয়ে রাখার বিশেষ সুবিধা ছিল।
পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকে বিমান বন্দরের জমি আর্মি স্টেট হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে সিভিল এভিয়েশন বিভাগ ১১১ একর জমি অ্যাকুয়ার বা হুকুম দখল করে নেয়। ওই অংশে বিমান বন্দরের স্টল ভবন ও রানওয়ে অবস্থিত।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর বিমান বন্দর সুত্রে জানা যায়, বন্দরটি নির্মাণের পর কিছুদিন সচল ছিল। পাকিস্থান আমলে ত্রাণ সামগ্রী পরিবহনসহ জরুরি কাজে এটি ব্যবহার করা হতো।
স্বাধীনতার পরও ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বিমান বন্দরটির যোগাযোগ ছিল। ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে নিয়মিত বিমান সার্ভিস চালু ছিল। তখন থেকে উত্তরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপদের সঙ্গে ঢাকার বিমান চলাচলের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই বন্দরটি।
আরও জানান, ১৯৮০ সালে লোকসানের কারণে দেখিয়ে বিমান চলাচল বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। পরে দাবির মুখে ১৯৯৪ সালে পুনরায় বিমান চলাচল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে রানওয়ে, টার্মিনাল ভবন ও বিদ্যুতায়নের কাজসহ নানা সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়।
ওই সময় এয়ার বেঙ্গল ও বোরাকসহ ছয়টি বেসরকারি সংস্থা ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে স্টল বিমান সার্ভিস চালু করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। পরে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। তার কিছুদিন পর স্টল বিমান সার্ভিস চালুর প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
অব্যবহৃত বিমান বন্দরটির নিরাপত্তায় আছেন চারজন প্রহরী। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাজান হক জানান, নিরাপত্তার জন্য বন্দরটি ঘিরে এক সময় কাঁটাতারের বেড়া ও খুঁটি ছিল। এখন তার অবশিষ্ট কিছু নেই।
রাশেদ খান মেনন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালে এই বিমান বন্দরে কয়েক দফা পরিদর্শন করেছেন। ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দর চালু করতে এসে তিনি বলেছিলেন, এ ব্যাপারে তার মন্ত্রণালয়ের করণীয় কিছু নেই।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন তার নির্বাচনী জনসভায় অঙ্গীকার করেছিলেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে পুনরায় বিমান চলাচল চালু করবেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিমান প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনিও বিমান চলাচল চালুর ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে পারেন নি।
বিমান বন্দরটি অনেকে পরিদর্শন করেছেন কথাও দিয়েছেন তবে তা এখনো সচল হওয়ার সম্ভাবনাা দেখা যায়নি।

আপনি আরও পড়তে পারেন